মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার (marine drive road)

মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার


মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়।এই রোড কে ঘিরেই সম্প্রসারিত হচ্ছে সাগরের সৌন্দর্য্য। বর্তমানে আমরা কোথায় ঘুরতে গেলে সবচেয়ে আগে মাথায় আসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কথা। 

কিন্তু এই কক্সবাজারে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ রোড (Marine Drive Road) । 

এই মেরিন রোডটি প্রায় ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। এ রোডটি কক্সবাজার কলাতলী থেকে শুরু করে টেকনাফে এসে শেষ হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ রোডের আশেপাশে অনেক সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে। 

যেমনঃ মেরিন ড্রাইভ রোডের একপাশে রয়েছে বিশাল সমুদ্র সৈকত আর অন্য পাশে রয়েছে নানান রকম সবুজ গাছপালা রাস্তা ঢাকা আবার মাঝে মাঝে সবুজে ঢাকা গাছপালার মধ্যে পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণা দেখতে পাওয়া যায়। 

এই মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার দিয়ে যাবার সময় সমুদ্র সৈকতের অপূর্ব সৌন্দর্য এবং সমুদ্র সৈকতে জেলেদের মাছ ধরার ইত্যাদি নানান ধরনের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এর পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতের দেখা মিলবে টেকনাফে গর্জন ফরেস্ট খ্যাত চিরহরিৎ বন।

মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার দিয়ে হিমছড়ি ও ইনানী  সমুদ্র সৈকত যাবার জন্য কক্সবাজারে কলাতলী বা সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে মাইক্রোবাস, অটো রিক্সা, সিএনজি অথবা খোলা জীপ ইত্যাদি করে যেতে পারবেন। এই রোড দিয়ে টুরিস্ট ক্যারাভানে ভ্রমন প্যাকেজ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

আরো পড়ুনঃ মাথিনের কুপ টেকনাফ।

মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার দেখতে কক্সবাজারে কিভাবে যাবেনঃ

বাস সার্ভিসঃ

বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে ঘুরতে আসলে প্রথমে আপনাদের কক্সবাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিভিন্ন উপায়ে আসা যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ গ্রীন লাইন, শ্যামলী পরিবহন, সৌদিয়া, সোহাগ পরিবহন, মডার্ন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এস আলম ইত্যাদি বাসে করে আপনি কক্সবাজার আসতে পারবেন। বাসগুলো শ্রেণীভেদী প্রতিটি সিটের মূল্য ৯০০ টাকা থেকে ২,৫০০ টাকা পর্যন্ত। 

railway station coxsbazar


রেলওয়ে সার্ভিসঃ

কক্সবাজার যাবার জন্য ঢাকা থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে বিমানবন্দ রেলস্টেশন হতে সোনার বাংলা , তূর্ণা - নিশীথা,কিংবা সুর্বণ এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী ট্রেনে যাত্রা করতে পারবেন। এরপর ট্রেন থেকে নামার পর চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ এলাকা, ধামপাড়া বাসস্ট্যান্ড, অলংকার মোড়, সিনেমা প্যালেস থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এস আলম অথবা ইউনিক পরিবহন করে কক্সবাজারে যেতে পারবেন। এখানে এই বাসগুলোর প্রতি সিটের ভাড়া ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। 

বিমান সার্ভিসঃ

এছাড়াও আপনারা চাইলে আকাশ পথে কক্সবাজারে যেতে পারবেন যেমনঃ ইউএস বাংলা,বাংলাদেশ বিমান,নভোএয়ার ও নতুন এয়ার সার্ভিস এয়ার এস্ট্রা সরাসরি কক্সবাজার এ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।

কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার কিভাবে যাবেনঃ

সুগন্ধা পয়েন্টে মেরিন ড্রাইভ রোডে যাবার জন্য রয়েছে মাইক্রোবাস ,অটো, সিএনজি, খোলা জিবি ইত্যাদি। মেরিন ড্রাইভ রোডে অটোরিক্সাতে ঘুরতে অনেক সময় লেগে যাবে। আপনারা যদি একদিনে গিয়ে সেদিনই ফিরে আসতে চান তাহলে অটোরিকশা থেকে বিরত থাকুন। 

একদিনে গিয়ে সব জায়গায় ঘুরে দেখার জন্য আপনাদেরকে খোলা জীপ রিজার্ভ করতে হবে। এখানে সিজনে সিজনে গাড়ি ভাড়া হোটেল ভাড়া ইত্যাদি পরিবর্তন হয়ে থাকে। অফ সিজনে গাড়ি ভাড়া রিজার্ভ করতে ৪,০০০ টাকা লাগতে পারে। আর যখন সিজন হবে তখন ৫,০০০ টাকা লাগবে। 

মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার সম্পূর্ণ ঘুরে দেখতে হলে আপনাদের প্রায় ৪-৫ ঘন্টা সময় লেগে যাবে। মেরিন ড্রাইভ রোড দেখতে হলে আপনি যে গাড়ি রিজার্ভ করেছেন সেই গাড়ির ড্রাইভারকে কোথায় কোথায় যাবেন তা জানিয়ে রাখবেন। তা না হলে তারা অল্প কিছু জায়গা ঘুরিয়ে নিয়ে চলে আসবে আপনারা বুঝতে ও পারবেন না। 

আপনাদের যদি হাতে বেশি সময় থাকে তাহলে মেরিন ড্রাইভ রোড দেখার পর আপনারা চাইলেই হিমছড়ি কিংবা ইনানী বীজ পর্যন্ত গিয়ে দেখতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে আপনাদের ইজিবাইক অথবা অটোরিকশা রিজার্ভ করে নিতে পারেন। 

কোথায় থাকবেনঃ 

কক্সবাজারের সাধারণত হোটেল,মোটেল,কটেজ কোনো কিছুর ই অভাব নেই।কক্সবাজারেপ্রায় ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল,কটেজ রয়েছে। এই হোটেলের মধ্যে রয়েছেঃ সায়মন বীচ রিসোর্ট, সী গাল,সী ক্রাউন, উর্মি গেস্ট হাউস, ইকরা বীচ রিসোর্ট, মিডিয়া ইন,ওশেন প্যারাডাইজ,কক্স টুডে,নিটোল রিসোর্ট, সী প্যালেস,নীলিমা রিসোর্ট, অভিসর,হানিমুন রিসোর্ট, লং বীচ, কল্লোল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

অফ সিজনে অগ্রিম হোটেলে বুকিং না দিলেও রুম পাবার কোনো নিশ্চয়তা থাকে কিন্তু ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে জানুয়ারি ১৫ তারিখ পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং দিয়ে রাখা শ্রেয়।সিজন অনুযায়ী অফ সিজনে হোটেলের ভাড়া অর্ধেক হয়ে থাকে।  আপনাদের হাতে যদি সময় থাকে তাহলে আপনারা গাড়ি থেকে নেমে আশেপাশে একটু খোঁজ খবর নিলে দরদাম করে হোটেল খুজে নেয়ায় ভালো। 

কক্সবাজার মেইন রোড বা বীচ থেকে হোটেলে যত দূরে হবে থাকার ভাড়া ততটা কম হতে থাকে।  আপনারা যখন হোটেল খুজবেন তখন রিক্সাওয়ালা কাছে থেকে কোনো রকম পরামর্শ না নেওয়া উচিত। আপনাদের যদি খোঁজ খবর জানতে হয় তাহলে ফেসবুক পেইজ অথবা ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।ভালো মানের হোটেল বুকিং করতে আমাদের এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করুন। ১০০% বিশ্বস্ত ও নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক মানের এই সাইট।

আরো পড়ুনঃ হোটেল বুকিং করবেন যেভাবে।

কোথায় খাবেনঃ 

মেরিন ড্রাইভ রোডের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মানের হোটেল বা রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। আপনারা চাইলে এগুলো রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে পারেন। আবার কক্সবাজারে সব ধরনের ও সব মানের রেস্টুডেন্ট আছে। মধ্যেম মানের বাজেটে রেস্টুরেন্ট এর মধ্যে রয়েছেঃ ঝাউবন,পৌষি,রোদেলা,নিরিবিলি,ধানসিঁড়ি,  ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সিজন অনুসারে অন্য অনেক কিছুর মতো এখানে খাবার এর দাম কম বেশি হয়ে থাকে। 

পৌষী রেস্টুরেন্ট
পৌষী রেস্টুরেন্ট - www.ourcoxsbazar.com


বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মেরিন ড্রাইভ রোড কক্সবাজার 

পথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট পড়বে। সেখানে বিনা সংকোচে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন৷ ঝামেলা এড়াতে জাতীয় পরিচয় পত্রের একটি কপি সব সময় কাছে রাখবেন, ধন্যবাদ। 

সতর্কতাঃ

সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন হতে দেখা যায়। যেমনঃ রাস্তাঘাট,বাসের ভাড়া,ট্রেন ভাড়া, বিমান ভাড়া, হোটেল ভাড়া,খাবারের দাম ইত্যাদি অনেক কিছুর দাম পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে বর্তমান তথ্য এর মিল না ও থাকতে পারে। এর জন্য ভ্রমন এর আগে খোঁজ খবর নিয়ে বের হওয়া উচিত।

অনেক সময় www.ourcoxsbazar.com এ যানবাহনের মোবাইল নাম্বার, হোটেলের মোবাইল নাম্বার দিয়ে থাকে সেই সকল নাম্বারে অর্থনৈতিক লেন দেন এ আরো সর্তকতা অবলম্বন করুন।  টাকা পয়সা লেন দেন করে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমাদের টিম কোনোভাবে দায়ী থাকবে না। 

Post a Comment

0 Comments

হোটেল সী ওয়ার্ল্ড কক্সবাজার (Hotel Sea World Cox'sbazar)