কক্সবাজার ভ্রমণ টিপস হিসাবে ৭টি বিষয় খেয়াল করতে হবে। তাহলে অর্থ সাশ্রয়ের সাথে সাথে ভ্রমণটাও আনন্দদায়ক হবে।সমুদ্র দেখতে ইচ্ছে হলেই কোনো দিক ভালোভাবে চিন্তা ভাবনা না করেই আমরা সবাই কক্সবাজার এর উদ্দেশে রওনা দেই। দেশের প্রধা্ন পর্যটন গন্তব্য স্থানটি হলো কক্সবাজার। সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। প্রতি বছরই লাখ লাখ পর্যটক ভীড় করেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনা, প্রাকৃতিক মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন লক্ষ লক্ষ পর্যটক এই কক্সবাজার।
কক্সবাজার ভ্রমণ টিপস গুলো আপনাদের কাজে লাগতে পারে।
বর্তমানে কক্সবাজারে পাঁচটি তারকা হোটেল এবং বিভিন্ন হোটেল সহ উড়ন্ত রেস্টুরেন্ট চালু করা হয়েছে। লোকজনের কক্সবাজারেে এর উপর চাহিদা বাড়ার কারণে কক্সবাজারের খরচ ও দিন দিন বেড়ে চলছে। তাই অনেক নিম্ন আয়ের, এমন কি মধ্যবিত্তরাও খরচের ভয়ে এই সৌন্দর্যময় কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে যেতে পারেন না। তবে চাইলে কয়েকটি উপায়ে খরচ কমিয়ে অল্প অল্প খরচের মাধ্যমে ঘুরে আসতে পারবেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে।
এই সাতটি উপায় গুলো মেনে চললে আপনি খুব অল্প টাকার ভিতরে ঘুরে আসতে পারবেন।
১। সপ্তাহের ছুটি দিনগুলোতে ঘুরতে যাবেন না। পৃথিবীর সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছুটি দিনে ভীর বেশী থাকে। এমন দিনগুলোতে কক্সবাজার পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। যেমন - ঈদের সময়, সরকারি ছুটি এবং ডিসেম্বর মাস, এড়িয়ে চলুন ভ্রমণের ক্ষেত্রে। এ সময় সবকিছুর দাম অনেক বেশি বেড়ে যায়।
২।বাজেট ট্রিপে যতটা সম্ভব লাগেজ কম নিয়ে যাবার চেষ্টা করবেন। এইসব সঙ্গে থাকলে অনেক সময় চলাফেরা সমস্যা হয। ফলে বিভিন্ন সময়ে রিক্সা বা অটো ও বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন ব্যবহার করতে হয়। এর জন্য কম খরচে ভ্রমণের উদ্দেশ্য কোথাও গেলে সঙ্গে রাখুন একটা সামান্য ব্যাকপ্যাক।
যেটি আপনি পিঠে ঝুলিয়ে নিয়ে হাঁটতে পারবেন। আবার প্রয়োজন যেকোনো সময় দৌড়াতে পারবেন। এই ব্যাগটি আমরা সাধারণত চিনি কলেজ ব্যাগ নামে।
৩। যখন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন বাসা থেকে তখন চেষ্টা করবেন রাতের গাড়িতে আসা-যাওয়া করার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি কক্সবাজার বাস পেয়ে যাবেন। নন এসি বাসে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া দিয়ে চলে যেতে পারবেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার। যাওয়া আসা দুই রাত বাসে থাকলে আপনার দুই দিন হোটেলে থাকার খরচ অনেকটাই কমে যাবে।
কক্সাজার ভ্রমণ টিপস ফলো করে ভ্রমণ বাজেট ফ্রেন্ডলি করুন।
৪। কক্সবাজার গিয়ে থাকবেন কোথায়? নিজেই হোটেল খুজে বের করুন। অনেক সময় বাস থেকে নামার পর সিএনজি বা রিক্সাওয়ালা বিভিন্ন হোটেলের সামনে নিয়ে যাবে। ভুলেও তাদের দেখানো হোটেলে থাকবেন না। কারণ তারা বড় অংকের কমিশনের বিনিময়ে হোটেল ঠিক করে দেন। তাই একটু কষ্ট করে পায়ে হেঁটে হোটেল নিজেই খুঁজে বের করুন। কক্সবাজার বিচের থেকে অনেক দূরে হোটেল ভাড়া নিতে হবে, কারণ আমি যতটাই বীচের কাছাকাছি যাব ততটাই ভাড়া বাড়বে।যেহেতু আপনি বিচে ঘুরবেন তাই বেশি ভাড়া দিয়ে সমুদ্রের পাশে থাকার কোন প্রয়োজন নেই । কলাতলী রোডে একটু গলির মধ্যে খোঁজাখুঁজি করলে ৫০০ টাকার মধ্যে মোটামুটি ভালো মানের হোটেল পেয়ে যাবেন।
৫। সমুদ্রে গিয়ে ইজি বাইক বা অটো ব্যবহার করুন। ইনানী বা হিমছড়ি যেতে চাইলে কলাতলী মোড় থেকে লোকাল ইজি বাইক/ অটোতে চলাফেরা করুন । হিমছড়ি পর্যন্ত মাত্র ২০ টাকায় ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন। আবার ৫০ টাকার মত খরচ করলে ইনানী বিচ পর্যন্ত যাওয়া যায়। আর যদি সংখ্যায় বেশি হন তাহলে ইজিবাইক বাদ দিয়ে অটো রিজার্ভ করে নিন ২০০ টাকার ভিতরে। একইভাবে মহেশখালী যেতে চাইলে লঞ্চ ঘাট থেকে শেয়ারে স্পিড বোটে উঠে পড়ুন। ওইখানে আদিনাথ মন্দির অবস্থিত। আপনারা চাইলেই আদিনাথ মন্দিরটি ঘুরে দেখে আবার চলে আসতে পারেন কক্সবাজার।
Photo by Ashraful Pranto on Unsplash |
৬। সঠিক সময়ে চেক আউট করুন। হোটেলে সাধারণত চেক ইন দুপুর ১টা আর চেক আউট সকাল ১১ টার দিকে হয়। তাই আগে থেকেই জানিয়ে রাখুন আপনি সন্ধ্যা পর্যন্ত কি হোটেলে রুমে থাকতে পারবেন কিনা। তবে ভিড় থাকলে আপনাকে ১১ টার পর আর সময় দিতে দিবেন না তারা। এমন ক্ষেত্রে রুম ছেড়ে দিয়ে সঙ্গে ব্যাগ বা লাগেজ থাকলে সেগুলো রেখে যেতে পারেন হোটেল কাউন্টারে। সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় হোটেলে গিয়ে ব্যাগগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।
৭। কক্সবাজারে খাবারের জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এক সঙ্গে বেশ কয়েকজন গেলে অবশ্য খাওয়া খরচ সহ সব কিছুর খরচ কমে আসে। যেমন- একটি লইট্টা মাছের ফ্রাই নিলে ৩ জন খাওয়া যায়। আবার ৮০ টাকা প্লেটের ভর্তা ভাজি নিলে অনায়াসে ৪ জন ভাগ করে খাওয়া যায়। মূল খাবারের জন্য যে তরকারি নিবেন সেটিও ভাগ করে খেলে কিছু টাকা খরচ কমে যাবে। এমন প্রতিটা খাবার ভাগ করে খেতে পারলে মাথাপিছু প্রতি বেলা ১৫০ টাকায় নেমে আসবে। কক্সবাজার দীর্ঘতম সুমদ্র সৈকত এর পাড়ের হোটেল গুলোতে খাবারের দাম একটু বেশী। যদি শহরে গিয়ে খাবার খেতে চান তাহলে কম খরচে খেতে পারবেন। শহরের লালদীঘির পারে অনেক হোটেল আছ, সেখানে সবাই একসঙ্গে গিয়ে খুব কম খরচে খাবার খেতে পারবেন। যদিও অনেক কিছু আইটেমের দাম বেশি। সেগুলো আপনারা আপনাদের তালিকা থেকে বাদ দিন। যেমন- রূপচাঁদা মাছ অর্ডার করলে ৩৫০ টাকা যোগ হবে। একই কথা চিংড়ি মাছের জন্যও প্রযোজ্য। ওশেন প্যারাডাইস হোটেলের উল্টো দিকে বেশ কয়টি সুন্দর হোটেল আছে, সেখানে সবাই একসঙ্গে খাবার খেলে অনেক টাকা কম পাবেন।
এইভাবে আপনারা কক্সবাজার ভ্রমণ টিপস মেনে চলতে পারলে কক্সবাজারে ভ্রমণ খুব অল্প খরচে করতে পারবেন।
0 Comments