কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার (famous food coxsbazar)



কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার অনেক রয়েছে।বাংলাদেশের রন্ধন শিল্প হলো লুকানো ধন।যা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।কক্সবাজারে যারা বেড়াতে আসে তাদের এখান কার খাবার সম্পর্কে খুব একটা ধারণা না থাকায় অনেক মজাদার খাবারে আশ্বাদন থেকে বিরত থাকতে হয়।আপনি যদি মশলাদার ও সামুদ্রিক খাবার পছন্দ করে থাকেন তবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত হতে পারে বেস্ট গন্তব্য।

কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার গুলো বাংলাদেশী সামুদ্রিক খাবার প্রেমীদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশী খাবারের ইতিহাস বলতে গেলে আপনাকে এই দেশের জম্মের ইতিহাস জানতে হবে। বৃটিশ শাসনাধীন থাকার সময় পুর্ব বাংলা ও পশ্চিম বাংলা নামে বাংলাকে ভাগ করে।বিভাজন টি ধর্মের ভিত্তিতে করা হয়। পুর্ববাংলা ছিলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট আর পশ্চিমবাংলা ছিলো হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট।তারপর ভারতবর্ষ ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত হয়ে যায় ভারত ও পাকিস্থান রাষ্ট্র গঠিত হয়।পুর্ব বাংলা, পুর্ব পাকিস্থান নাম ধারণ করে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়। তারপর পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নেয়।তখন ছিলো ১৯৭১সাল।

বৈচিত্র্যময় ইতিহাসের কারনে অনেক খাবারে পাকিস্তান ও ভারতীয়দের বিশেষ পশ্চিম বাংলার খাবারে সাথে মিলে যায়।তবে মুসলিম অধিবাসী বেশী হবার কারনে মাংশের ব্যবহার বেশী দেখা যায়।

কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার


সাধারণ বাংলাদেশী কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবারঃ

বাংলাদেশ দক্ষিন এশিয়ার একটি দেশ। বিশ্বের ধান উৎপাদনে চতুর্থ স্থান অধিকারী দেশ হওয়ার প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত। ভাত সাধারণ বিভিন্ন ধরনের তরকারীর সাথে খাওয়া হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য হচ্ছে আটার তৈরী সামগ্রী যেমন পরোটা, রুটি ও নান।এগুলো পরিবেশনের সময় উপাদেয় বিভিন্ন তরকারী ও ডাল সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজধানী ঢাকা একসময় মোগলদের রাজধানী থাকায় রান্না ভারতীয় ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায়।বিভিন্ন খাবার রান্নার সময় প্রচুর মশলার ব্যবহার হয়ে থাকে। বিরিয়ানি ও কোরমা যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারনে এখানে ইসলাম ধর্মে হালাল মাংস পাওয়া যাবে।যেমন - গরু, খাসী, মহিষ ও মুরগী। কিন্তু এখানে শুকুরের মাংস পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ একটি নদী মাতৃক দেশ ও দক্ষিনে সাগর থাকায় এখানে মাছ এবং সীফুডের আধিক্য অনেক বেশী। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গরীব হওয়ায় অনেকে মাছ ও মাংস কেনা কঠিন। তবে সবজ্বি ও ডালের দাম তুলনা মুলক কম হওয়ায় খাবার গুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

কক্সবাজার

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা সমুদ্র সৈকত। ১২০ কিলোমিটারের অধিক এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হলে অনেক পরিছন্ন। যদিও সারা বছর এখানে পর্যটকের পদচারণা থাকে।

অল্প খরচে যে কোন পছন্দের পয়েন্ট এ আপনি প্রচুর আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। এখানে থাকার জন্য আবাসনের কোন অভাব নেই।সাধারণ থেকে লাক্সারী মানের হোটেল পাবেন।এটি ভ্রমন করাও বেশ সহজ।ঢাকা থেকে বিমানে যাতায়াতে ব্যবস্থা আছ।

কক্সবাজারে আপনি দুই তিনদিন অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারেন শুধমাত্র বাংলাদেশী স্থানীয় খাবার গুলো উপভোগ করে।যা এখানে প্রচুর পরিমান রয়েছ।

সমুদ্রের তীরে হওয়ায় কক্সবাজারে প্রচুর সামুদ্রিক খাবারের স্টল ও হোটেল রয়েছ।আছে অনেক বারবি কিউ সেন্টার একদম লাইভ সী ফিস। রেস্তোরা গুলোতে মাছ, কাঁকড়া, অক্টোপাস থেকে তৈরী দেশী খাবারের বিশাল সমাহার।

প্রথম বার যারা কক্সবাজারে যাবেন সারা দিন লেগে যাবে একটি ভালো খাবারের স্থান অনুসন্ধানে।কি খাবেন তা সিলেক্ট করতে।এখানে কক্সবাজারে যা খাবেন তার একটি তালিকা তৈরী করে দেওয়া হলো।

কক্সবাজারের খাবার
পৌষী হোটেলের ভর্তা - www.ourcoxsbazar.com

কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার যা খাওয়া উচিতঃ

ইলিশ মাছের তৈরী খাবারঃ

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ইলিশ মাছ। স্মরণ করিয়ে দেই ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ।বাংলাদেশী সামুদ্রিক খাবারের পুর্নতা তখনই পাবেন যখন দুই থেকে তিনটি ইলিশ মাছের আইটেম খাবেন।

ইলিশ মাছের পাতুরী।

সারা বাংলাদেশে যেকোন রেস্টুরেন্ট এ এটি পাওয়া যায়।এটি বাংলাদেশের জাতীয় খাবার।ইলিশের এই ডিশ তৈরী করা আগে মেরিনেট করে কলা পাতায় মুড়িয়ে রাখতে হবে।হলুদ, সরিষা ও মরিচের গুড়া বা পাটায় পিষে এক ধরনের পেষ্ট তৈরী করা হয়।এই পেষ্ট মাছের গায়ে মাখিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখাকে মেরিনেশন বলা হয়।

রান্না করা মাছ সরু চালের সাদা ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়। সৈকতে দীর্ঘ সময় ছাতিওয়ালা বেঞ্চে গাঁ এলিয়ে ঘুমানোর পুর্বে এটা হতে পারে একটা দুর্দান্ত লাঞ্চ।

সর্ষে ইলিশ

এই স্পেশাল আইটেম তৈরীতে ঘন ঝোল ব্যবহার করে তৈরী করা হয়।আর এই ঝোলে অনেক অংশে জুড়ে থাকে সরিষা বীজের পেষ্ট।সরিষার বীজ, হলুদ গুড়া, জিরা, কাঁচা মরিচের পেষ্ট এ মাছ যোগ করার আগে সিদ্ধ করে নেওয়া হয় তারপর মাছ যোগ করতে হয়।

উপরেরটির তুলনা এটি আরো সুস্বাদু ও উপাদেয় হয়।কারণ এই খাবার তৈরীতে আরো বেশী মশলা ব্যবহার করা হয়।এটিও সাদা ভাতের সাথে পরিবেশ করা হয়।সরু চালের ভাতের ব্যবহার আরো মজাদার হয়ে উঠে।

কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার


বৈশাখী পান্তা ইলিশ

পান্তা ইলিশ হচ্ছে বাংলাদেশীদের নববর্ষের খাবার।এটি ঐতিহ্যকে লালন করে থাকে।পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষের দিনে এই খাবার ব্যাপক ভাবে পাওয়া যায়।সিদ্ধ ভাত দীর্ঘসময় পানিতে ভিজিয়ে রাখলে একে পান্তা ভাত বলা হয়।বৈশাখের প্রথম দিনে এই পান্তা ভাত ইলিশ মাছ ভাঁজার সাথে খেতে হয়।

মরিচ, হলুদ ও অন্যান্ন মশলা দিয়ে ভাঁজা হয় এবং পরিবেশনের সময় মরিচ, পিঁয়াজ ও টমেটো দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়।

ইলিশের জনপ্রিয় আইটেম কোথায় পাবেনঃ শালিক রেস্টুরেন্ট কক্সবাজার

ভর্তা

এটি একধরনের সিদ্ধ করা চটকানো মিশ্রণ।কার্যত রান্না করা আগে মুল উপাদান গুলোকে সিদ্ধ করা হয়।এটি সারা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।বেশ জনপ্রিয়।বেগুন, আলু ও নানা ধরনের সবজি ব্যবহার করে তৈরী করা হয়। আবার বিভিন্ন রকমের মাছ দিয়ে এই ভর্তা তৈরী করা হয়।যেমন - টাকি মাছ, বোয়াল মাছ ও চিংড়ি মাছ।

সাধারণ সরলতা এই খাবারের জয়প্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছ।এটিও খুব সুস্বাদু।বিভিন্ন ভেষজ, হলুদ, মরিচের গুড়া দিয়ে ম্যাশ তৈরী করা হয়।এই খাবার ভালতের সাথে বিভিন্ন মেইন তরকারীর সাথে এটা সাইড ডিশ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।

কোথায় পাবেনঃ পৌষী রেস্টুরেন্ট কক্সবাজার।

মাছের ঝোলঃ

বাংলাদেশের প্রচলিত খাবারের মাঝে মাছের ঝোল অন্যতম।প্রায় প্রতিটি বাড়ীতে রান্না হয়।বাংলাদেশের প্রতিটি রেস্টুরেন্ট এ পরিবেশ করা হয়।বিভিন্ন মাছের সাথে মশলাদার ষ্টু যা বেগুন আলুর মত সবজি মিশিয়ে তৈরী করা হয়।

এই খাবার টি নুন্যতম মশলা দিয়ে তৈরী করা যায়।তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই খুব মশলাদার হয়ে থাকে।স্টুর ঝোল জিরা, হলুদ, ধনিয়া ইত্যাদি সহযোগে তৈরী তাঁতে সরিষা পেষ্ট ও দেওয়া হয়ে থাকে।অতিরিক্ত পিঁয়াজ ও টমেটো দেওয়া হয় ঘন ও টক স্বাদ যুক্ত করা জন্য।তারপর ঝোলের মধ্য পছন্দ সই মাছ যোগ করা হয়ে থাকে।ভাতের সাথে খাবার সময় এটি কে স্বর্গীয় মনে হবে।কক্সবাজারে অলস বিকাল কাটানো আগে এটা খাওয়া একটি দুর্দান্ত ফিলিংস এনে দিবে।

এছাড়া কক্সবাজারে বিভিন্ন শুঁটকি রিসিপি, কাঁকড়া ফ্রাই অনেক মজাদার।

বিরিয়ানিঃ

শুধু এই দেশ নয় এই উপমহাদেশের বিখ্যাত খাবার এইটি।এই খাবার যদিও ভারতীয় মোগলদের হাত ধরে উৎপত্তি ও প্রসিদ্ধি লাভ করে।বাংলাদেশে এই খাবারের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।বিরিয়ানি তৈরীর পদ্ধতি মোটামুটি একই রকম।চাল, মাংস ও মশলা একই সাথে মিশিয়ে মাটির পাত্রে ভাপদিয়ে সিদ্ধ করা হয়।এভাবে মুলত তৈরী হয় বিরিয়ানি যা সবাই উপভোগ করে থাকে।

পৌষী রেস্টুরেন্ট
পৌষী রেস্টুরেন্ট - www.ourcoxsbazar.com

কক্সবাজারের আপনি এই বিরিয়ানির স্বাদ নিতে পারেন।তবে বিরিয়ানির সবচেয়ে মজাদার প্রকারটি হলো কাচ্চি বিরিয়ানি।কাচ্চি অনেক জনপ্রিয়। কক্সবাজারের প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেন্ট এ এই বিরিয়ানি পাওয়া যায়।

মেজবানির মাংস কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার তালিকায় প্রথমঃ

এটা গরুর মাংসের অসম্ভব জনপ্রিয় একটি খাবার।কক্সবাজারের বিত্তশালীরা মানুষ মারা গেলে, জম্মদিনে অথবা অন্য কোন অনুষ্ঠানে বড় পরিসরে খাবারের আয়োজন করলে তাকে মেজবান বলে থাকে।আর এই অনুষ্ঠান গুলোতে ভাত, ডাল আর গরুর মাংসের ব্যবস্থা রাখেন।অনেকে বেশি পরিমানে গরুর মাংস একসাথে রান্নার ফলে হয় অত্যন্ত সুস্বাদু।তখন এই মাংসকে মেজবানির মাংস নাম দেওয়া হয়।

কক্সবাজারে কোথায় থাকবেন বাজেট ফ্রেন্ডলি হোটেল।

একটি গরু সবখানের মাংস, কলিজা ও তেল ইত্যাদি অংশ নিয়ে অল্প আঁচে ধাপে ধাপে বিভিন্ন মশলা যোগ করা হয়।নামানোর আগে ঘি ঢেলে দেওয়া হয়।দীর্ঘ সময় চুলা বন্ধ করে ঢাকনা দিয়ে রেখে দেওয়া হয়।এতে করে মাংস মজে যায়।স্পাইসি, রসালো ও সফট হয়ে যায়।পরিবেশনের আগে পেয়াজের বেরেস্তা দিয়ে সাজিয়ে গরমে ভাতের সাথে খাওয়া হয়।

কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার এর তালিকা অনেক দীর্ঘ।আছে অনেক ধরনে পিঠা ও মিস্টান্ন। নারিকেল মিশিয়ে একধরনের পিঠা তৈরী করে যা বেশ মুখরোচক।এছাড়া উখিয়ার স্পঞ্জ মিষ্টির নাম সারা দেশ জোড়া।এখানে স্ট্রীট্র ফুডের মাঝে আছে চোনা পিয়াজু।ছোলা, পিয়াজু এবং পর্যান্ত পিয়াজে মিশিয়ে সরবরাহ করা হয়।আপনারা যদি নতুন কোন আইটেমের সন্ধান পান কমেন্ট করুন।আমরা পরে এটা উপযুক্ত ক্রেডিট সহ যোগ করে দিবো।

Post a Comment

0 Comments

হোটেল সী ওয়ার্ল্ড কক্সবাজার (Hotel Sea World Cox'sbazar)