চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গ্রেফতার (Mahia Mahi arrested)



চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি হঠাৎ জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভে। ১৭ই মার্চ লাইভে তিনি অভিযোগ করেন তার স্বামীর গাড়ীর শো রুমে হামলা করা হয়েছ। 

সানিরাজ কার প্যালেস নামে একটি গাড়ীর শো রুম যেটা বদরে আলম সরকারী কলেজের পাশে অবস্থিত।

যার মালিক তার স্বামী রাকিব বলে লাইভে তিনি উল্লেখ করেন।

ভোর ৫টার দিকে একদল লোক এই শোরুমে হামলা করেন।যার নেতৃত্বে ছিলেন ইসমাইল সরকার ও মামুন সরকার।এই হামলায় শো রুমের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করা হয়। 

সাইন বোর্ড খুলে নেওয়া সহ গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় জানালার কাঁচ ভাংচুর করা, চেয়ার টেবিল ভাংচুর করা ও ক্যাশ কাউন্টারে রক্ষিত টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

পরে টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

মাহিয়া মাহি ফেসবুক লাইভে দাবী করেন, মোল্লা নজরুল দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে আমাদের শো রুম ইসমাইল সরকার ওরফে লাদেন কে দখল করে দিচ্ছেন।এই মোল্লা নজরুল হলেন গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার।

আর উপরের এই কথার জন্যই পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি কে যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়ঃ

মাহি তার পেইজ থেকে লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবার পর বাসন থানার উপ - পরিদর্শক রোকন মিয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

মামলা প্রধান আসামী করা হয় রাকিব সরকার কে ও ২ আসামী করা হয় মাহিয়া মাহিকে।

জি এম পি কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল সাংবাদিকদের জানান, মাহি ও তার স্বামী হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে, মান হানিকর, কুরুচিপুর্ন, মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচার করেন।

যা আইন শৃখলা পরিস্থিতি অনবতি ঘটানোর চেষ্টা হিসাবে বিবেচিত হবার অপরাধ করেছেন।

শনিবারে যখন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন তখন সময় ছিলো সকাল ১১টা। 

গাজীপুর মেট্রো পলিটান পুলিশ শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তাকে গ্রেফতারে বিষয় নিশ্চিত করেন।

মাহি শুধু এই মামলা নয় পরের জায়গা জোর পূর্বক দখল ও লোক জনকে কাছে গেলে বাঁধা প্রদান সহ মার ধোর করা মামলা করা হয় যেখানে মাহি ও তার স্বামীসহ ২৮ জনকে আসামী করা হয়েছ।

মামলাটি দায়ের করেন স্থানীয় ইসমাইল সরকার যিনি উক্ত শো রুমের মালিক জমির প্রকৃত মালিক বলে নিজেকে দাবী করেন।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি এর স্বামী রাকিবের বিরুদ্ধে যত অভিযোগঃ

এদিকে মামলার বাদী ইসমাইল সরকার শুক্রবার বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। 

সেখানে লিখিত বক্তব্যে রাকিবের বিরুদ্ধে রাকিবের করা অপরাধের বিবরণ তুলে ধরেন।

রাকিব ঢাকা টাঙ্গাইল মহা সড়কে অবস্থিত মামুন সরকার ও তার সাড়ে ৩২ বিঘা জমি জোর পুর্বক দখল করে নেয়।

৫বছর পুর্বে দখল করে নেওয়া সেই জমিতে সানিরাজ কার প্যালেস নামে একটি গাড়ী শোরুম স্থাপন করে।

রাকিব বর্তমান আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাসন মেট্রো থানা এবং পুর্বে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।

অভিযোগ করে বলেন, জমির প্রকৃত মালিক মামুন তার জমিতে কাজ করতে গেলে রাকিবের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের উপর আক্রমন চালায়।

তাদের মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।রড বাইন্ডিং মেশিন ভেঙ্গে ফেলে।তাদের মারধর করে। এতে সে সহ আরো তিন জন আহত হয়।

খুন, ধর্ষন, অস্ত্র মামলা, জোর পুর্বক জমি দখল ও মাদক মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

বর্তমান স্ত্রী মাহিয়া কে এই সব কাজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করছে। তার জোর পুর্বক দখলকৃত জমি উদ্ধার ও রাকিব কে গ্রেফতার তার অত্যাচার থেকে এলাকাবাসী তথা ইসমাইল ও মামুন সরকার কে রক্ষার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান।

গ্রেফতার ও জামিন নিয়ে দিনভর নাটকীয়তাঃ

স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন মাহি কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মাহি পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষের যে অভিযোগ করেছেন তা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।

দুপুরে কারাগারের পাঠানোর পর আদালত বিকেলে তার জামিন মঞ্জুর করেন।দুইটি মামলাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হলে তিনি সাড়ে তিন ঘন্টা কারা যাপন করেন।

মামলা দুটি হলো জমি দখন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গর্ভবতী ও সেলিব্রেটি বিবেচনায় এই আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটান ৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন।জানাই মাহির ল' ইয়ার আনোয়ার হোসেন।

তিনি আরো বলেন, মাহিয়া মাহি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই বিদেশ থাকার পরও তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।

এই আদেশের ফলে সাড়ে তিন ঘন্টা পর মাহি মুক্তি লাভ করেন এবং সকল উৎকন্ঠা দুরিভুত হয়।যদিও পুলিশ ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করে ছিলেন।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি এর সংবাদ সম্মেলনঃ

রাতেই সংবাদ সম্মেলন করেন নায়িকা মাহি।এর আগে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন।

তেলিপাড়া এলাকার এক রেস্টুরেন্ট এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।নায়িকা বলেন, আমি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছি তিনি গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার।

পুরো পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়।আমার শোরুম দখল হয়ে যাচ্ছে এমন সময় আমি লাইভে এসেছি।লাইভে কখন যায় যখন দেয়ালে পিঠ থেকে যায়।

তবে মাহি আরো বলেন গ্রেফতারের পর থেকে গাজীপুর পুলিশ তার সাথে ভালো আচরণ করেন নাই।তিনি পানি চাইলেও একঘন্টা পরে তা দেওয়া হয়।

Post a Comment

0 Comments

হোটেল সী ওয়ার্ল্ড কক্সবাজার (Hotel Sea World Cox'sbazar)